ক্রিকেট মাঠের সাবেক ‘রাজা’ ইমরান খান এবার পাকিস্তানের ক্ষমতার মসনদে বসতে যাচ্ছেন। একজন ক্রিকেট তারকার প্রধানমন্ত্রী বনে যাওয়ার ঘটনা সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছে। পাকিস্তানের কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রাক্কালে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন বিখ্যাত নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সোশ্যাল সাইট ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তসলিমা ইমরান খানকে নেতিবাচকভাবেই বর্ননা করেছেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে মৌলবাদের উত্থান নিয়েও শংকা এবং হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তসলিমা লিখেছেন, ‘হাসিনা চান মদিনা সনদ অনুযায়ী দেশ চালাতে। পাকিস্তানের ইমরান খানও তাই চান। সপ্তম শতাব্দীতে ফিরতে চান তারা। ইমরান খান তো মুসলিম মৌলবাদি, জিহাদি, তালেবানদের বন্ধু। সেনাবাহিনীরও তিনি পেয়ারের লোক। দেশ চালাবেন সেনারাই। ইমরান শুধু গদিতে বসে চেহারা দেখাবেন। লোকটি অক্সফোর্ডে লেখাপড়া করেছেন। বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেই যে কেউ জ্ঞানের ভান্ডার হয়ে ফিরবেন, তা ভাবার কোনও কারণ নেই।’
‘বান্ধবীদের প্রেগনেন্ট করেছেন যথেচ্ছ। আমেরিকার মেয়ে সারা হোয়াইটকে কন্যা বলে অস্বীকার করেছিলেন, পরে প্রমাণ মিলেছে তিনিই পিতা। এক ইহুদি কচি মেয়েকে মুসলমান বানিয়েছিলেন বিয়ে করে। জেমাইমার কাছে তার পুত্র সুলাইমান আর কাসিম নামাজ রোজা করা পাক্কা ধার্মিক হিসেবে বড় হচ্ছে। ইমরানের হয়তো এরকমই দাবি ছিল।’
‘শেষের বিয়েটা করেছেন ধর্মগুরু বুশরাকে। বুশরার চেহারা নাকি বিয়ের আগে দেখেননি। বোরখায় মাথা থেকে পায়ের আঙ্গুল অবধি ঢেকে রাখেন বুশরা। এই মহিলাকেই ইমরান পছন্দ করেছেন। পছন্দের কী ছিরি! দ্বিতীয় স্ত্রী রেহান তার বইয়ে লিখেছেন, ইমরান তার স্ত্রীদের শারীরিক-মানসিক অত্যাচার করতেন।’
‘রেহান যা লিখেছেন, সব যদি সত্যি হয়, তবে ইমরান খান খুবই ভয়ঙ্কর লোক। বানি গালায় তার বাড়ি তো বাড়ি নয়, আস্ত একটা প্রাসাদ। এই প্রাসাদে বাস করে গরিবের কতটা কাছে তিনি যেতে পারবেন! ‘
‘তালেবানের হাতে একদিন তিনি গোটা পাকিস্তানই দিয়ে দেবেন। কিন্তু সেনাবাহিনী না চাইলে তার সেই ক্ষমতা নেই। সন্ত্রাসী হাফিজ সাইদ নির্বাচন করেছে। ও ব্যাটা কোনও আসন পায়নি। এ নিয়ে উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। জামাতিরাও এক সময় খুব বেশি আসন পেতো না বাংলাদেশে। কিন্তু সমাজে জামাতিদের প্রভাব ছিল প্রচন্ড। সমাজে প্রভাব থাকার কারণে তারা দুই দশকেই পুরো সমাজটাকে ভূতুড়ে বানিয়ে ফেলেছে।’
‘দেশ জুড়ে এখন বোরখা হিজাবের ছড়াছড়ি, মসজিদ মাদ্রাসায় পাড়া মহল্লা ভেসে গেছে, নারী বিদ্বেষীতে, হুজুরে, পীরে, মিথ্যেয়, লোভে, অসততায়, ধর্মে, ধর্ষণে সমাজ ডুবে গেছে। পাকিস্তানের জন্য দরকার ধর্ম নিরপেক্ষতায় , মানবাধিকারে, , সমানাধিকারে, গণতন্ত্রে, বাক স্বাধীনতায় গভীর ভাবে বিশ্বাসী রাজনীতিক। কিন্তু পাকিস্তানের দুর্ভাগ্য, ধর্মের রাজনীতি করে তাদের টিকে থাকতে হয়। বাংলাদেশেরও একই হাল। এই দুই দেশের আলাদা হওয়ার কোনও দরকার ছিল না। দুই দেশের আদর্শ তো শেষ পর্যন্ত একই।’